সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। গতকাল বৃহস্পতিবার বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মেয়র পদে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন জাপা চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা হলেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সাবেক সচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন, খুলনা সিটি করপোরেশনে মো. শফিকুল ইসলাম মধু, বরিশাল সিটি করপোরেশনে প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন তাপস এবং সিলেট সিটি করপোরেশনে মো. নজরুল ইসলাম বাবুল।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন বিসিএসের ১৯৮৩ ব্যাচের সাবেক কর্মকর্তা। স্বাস্থ্য সচিব থাকা অবস্থায় সমালোচনার মুখে ২০১৪ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তার আগে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ছিলেন। নিয়াজের বিরুদ্ধে চাকরির মেয়াদ বাড়াতে জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার অভিযোগ ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর নিজেই চাকরি ছেড়েছিলেন তিনি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়া শফিকুল ইসলাম মধু জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতির দায়িত্বে আছেন। এর আগে ২০১৩ সালে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু মাত্র ৩ হাজার ভোট পেয়ে জামানত হারান।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলের যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসকে মনোনয়ন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। এর আগে ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও তিনি বিপুল ভোটে হেরেছিলেন।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল একজন শিল্পপতি। তিনি সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক। গত সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে জাপার কেউ প্রার্থী না হলেও এবার অন্তত ৩ জন নেতা মাঠে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রার্থীদের নাম ঘোষণার আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমরা আশাবাদী হতে চাই। প্রত্যাশা করি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনের প্রতি দেশের মানুষ অনেকাংশেই আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ভোটের প্রতি আস্থা ফেরাতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে দায়িত্বশীলদের কাজ করতে হবে উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সব নির্বাচনে অংশ নেব, পার্টির এমন সিদ্ধান্ত ছিল। আমাদের প্রার্থীরা জয়ী হতে শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম করবেন। প্রার্থীরা যেন প্রচার-প্রচারণাসহ সব নির্বাচনী কাজে সমান সুযোগ পায়। ভোটাররা যেন স্বাচ্ছন্দে ও অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। দেশের মানুষ আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। পাঁচ সিটির নির্বাচনী পরিবেশ দেখে অবস্থা বুঝে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মূল্যায়ন করা হবে।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি ভোটের মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ ৯ মে এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে। খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে। প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে, প্রতীক বরাদ্দ ২৬ মে ও ভোট ১২ জুন। আর রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে, বাছাই ২৫ মে। প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন, প্রতীক বরাদ্দ ২ জুন ও ভোট ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
Leave a Reply